বিদেশে ভ্রমণ ভ্রমণ কাহিনী

প্লাজা দে সান্তা আনা ও লোরকা

আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ের দেশ স্পেন। আর রাজধানী মাদ্রিদ তার কেন্দ্রস্থলে। তবে কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা জন্মেছিলেন দক্ষিণের জিব্রালাটার প্রণালি ঘেষা আন্দালুসিয়া প্রদেশের গ্রানাডায়। কিন্তু লোরকাকে খুঁজে পাবেন মাদ্রিদেই।

স্পেনে ঘুরতে আসা পর্যটক অথবা যারা স্পেনের বাসিন্দা সবাই ঘুরতে আসেন প্লাজা দে সান্তা আনায়।

এখানেই আছে সেন্ট্রাল মাদ্রিদের অন্যতম আকর্ষণ কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকার ভাস্কর্য। প্লাজা দে সান্তা আনা স্কোয়ারের পূর্ব প্রান্তেই দেখতে পাবেন ভাস্কর্যটি।
 বিখ্যাত স্পেনিশ কবি-নাট্যকার ও সঙ্গীতজ্ঞ ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা। জন্ম ১৮৯৮ সালের ৫ জুন গ্রানাডায়। ১৯৩৬ সালের ১৯ অগাস্ট মাত্র ৩৮ বছর বয়সে তাকে হত্যা করা হয়। স্পেনে ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত চলমান গৃহযুদ্ধের সময় জেনারেল ফ্রাঙ্কোর ফেসিস্ট বাহিনীর শিকারে পরিণত হb লোরকা।
 মাদ্রিদের প্লাজা দে সান্তা আনা তে ব্রোঞ্জের তৈরি এই ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয় ১৯৯৮ সালে, লোরকার শততম জন্মদিনে। একটি ছোট্ট বেদীর ওপর মানুষের সমান মাপের ভাস্কর্য্য এটি।
 স্পেনিশ ভাস্কর জুলিও ফার্নান্দেজ কবি লোরকার ভাস্কর্যটি তৈরি করেন। কোট-টাই পড়া কবির হাত থেকে উড়ে যাচ্ছে একটি কবুতর। এমনটাই দেখতে পাবেন লোরকাকে।
 বড় আকারেই এই প্রাঙ্গন যাকে এরা প্লাজা বলে সেখানে গেলে দেখতে পাবেন লোরকার ভাস্কর্যের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রেস্টুরেন্ট আর বার। দোকানের সামনেই খোলা জায়গায় চেয়ার-টেবিল সাজানো। চলছে জম্পেশ আড্ডা।
 বেলা বাড়ার সাথে বাড়তে থাকে পর্যটকের সংখ্যা। শিশুদের ছোটাছুটি। সন্ধ্যা নামতেই জ্বলে ওঠে নানা রঙের আলো। বাড়ে তরুণদের আনাগোনা। বড় বড় ছাতার তলায় পাতা সব চেয়ার-টেবিল ভরে ওঠে নানা বয়সী মানুষে। গল্পে আড্ডায় মেতে ওঠে রাত। রেস্টুরেন্টগুলোর ভেতরেও বসার ব্যবস্থা আছে এবং সেটা বাইরে বসার চেয়ে সাশ্রয়ী।
 প্লাজার পাশেই আছে একটা থিয়েটার। ইচ্ছে হলে একটা প্লেও দেখে নিতে পারেন। এই প্লাজাতে বিশেষ বিশেষ সময়ে আয়োজন করা হয় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো’র।
 স্টেশন আতোচা (ATOCHA) থেকে হেঁটেই আসতে পারবেন প্লাজা দে সান্তা আনায়। স্টেশন আতোচা থেকে তিন মিনিট হাঁটলেই- রাস্তা আতোচা। এই রাস্তাতেই খুঁজে পাবেন সাধারণ থেকে শুরু করে চার তারকা মানের সব ধরণের হোটেল। এখান থেকে পাঁচ মিনিট হাঁটলেই প্লাজা দে সান্তা আনা।
 আর মাদ্রিদের বারাখাস এয়ারপোর্ট থেকে আতোচা আসবেন বাসে চড়ে। এয়ারপোর্টের গেটেই পাবেন এয়ারপোর্ট শাটল বাস। হলুদ রঙা বাসের গায়ে লিখা AEROPUERTO (এয়ারপোর্ট এক্সপ্রেস)। পাঁচ ইউরো খরচা করেই চলে আসতে পারবেন স্টেশন আতোচায়। শহরের বিভিন্ন পথের বাস, মেট্রো (আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে) আর অন্য শহরের যাওয়ার ট্রেনে চড়তে চাইলে তা পারবেন এখান থেকেই।

মো: আব্দুল কুদ্দুস, স্পেন থেকে

০২ জানুয়ারি, ২০১৮

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *